ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫ , ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ই-পেপার

ভারতে ভয়াবহ বন্যা, এবারও ভুগতে হবে বাংলাদেশকে?

আপলোড সময় : ০১-০৬-২০২৫ ০২:১৩:০৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০১-০৬-২০২৫ ০২:১৩:০৯ অপরাহ্ন
ভারতে ভয়াবহ বন্যা, এবারও ভুগতে হবে বাংলাদেশকে?
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছয় রাজ্য অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম, সিকিম ও ত্রিপুরা-এ মুহূর্তে ভয়াবহ দুর্যোগের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। কয়েক দিনের টানা ভারি বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নদীর পানির উচ্চতা দ্রুত বাড়ছে, সৃষ্টি হয়েছে ভূমিধস, ভেঙে গেছে সড়ক যোগাযোগ, ভেসে গেছে ঘরবাড়ি।

এই সংকট যতটা ভারতের, তার চেয়ে কম নয় বাংলাদেশের জন্যও। কারণ ইতিহাস বলছে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যখন বৃষ্টি হয় কিংবা পাহাড়ি ঢল নামে, তার সরাসরি ধাক্কা এসে পড়ে বাংলাদেশে। এসব অঞ্চলে প্রবাহিত নদীগুলো তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, সুরমা, কুশিয়ারা-ভারতের উজানে অবস্থিত। ফলে সেখানকার অতিরিক্ত পানি সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে।

এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। ১৯৮৮ সালের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ঢাকাসহ দেশের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা তলিয়ে গিয়েছিল। সেই বন্যার মূল কারণ ছিল ভারতের অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে পানি ছেড়ে দেওয়া। ২০০৪ সালে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আবারও ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। মেঘালয়ে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতের ফলে সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনায় অসংখ্য মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। এমনকি সাম্প্রতিক বছর ২০২২ সালেও একই দৃশ্য দেখা গিয়েছিল। মেঘালয়ে ভারী বর্ষণের ফলে সিলেট ও সুনামগঞ্জে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হয়েছিল মানুষ।

এই মুহূর্তে ভারতের সিকিম ও আসামে যে পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে এবং যেভাবে নদীর পানি বাড়ছে, তাতে বাংলাদেশের সিলেট, সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, নেত্রকোনা ও ব্রহ্মপুত্র তীরবর্তী এলাকাগুলো বড় ধরনের বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। ভারত যদি হঠাৎ করে ব্যারাজ বা জলাধার খুলে দেয়, তাহলে বাংলাদেশের নদীগুলোর পানির স্তর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিপজ্জনক হারে বেড়ে যেতে পারে।

ভেসে যেতে পারে ফসলের জমি, ডুবে যেতে পারে ঘরবাড়ি, গ্রাম থেকে শহর-সবখানেই দেখা দিতে পারে মানবিক বিপর্যয়। বিদ্যুৎ, সুপেয় পানি, খাদ্য, ওষুধ সব কিছুর সংকট দেখা দিতে পারে হঠাৎ করে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকবেন শিশু, বৃদ্ধ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন আর দেরি নয়, প্রস্তুতির সময় এখনই। স্থানীয় প্রশাসনকে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নজরদারি বাড়াতে হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড, আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে একযোগে কাজ করতে হবে। 

আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা, শুকনো খাবার মজুত করা, বিদ্যুৎ সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার দিকেও নজর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো-সাধারণ মানুষকে আগেই সচেতন করা এবং প্রয়োজনীয় সতর্কবার্তা পৌঁছে দেওয়া।

নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ